• রাত ১১:৪৯ মিনিট মঙ্গলবার
  • ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
নারায়ণগঞ্জ পল­ী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি পালন সোনারগাঁয়ে তিনদিন ব্যাপী ফায়ার সার্ভিসেরর স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষন সোনারগাঁয়ে আস্থা ফিডে সেনা প্রধান সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ সোনারগাঁও পৌরসভায় কালামের কেন্দ্র কমিটির সভা সোনারগাঁয়ে বিশ বছর পর বাকপ্রতিবন্ধী ভাইকে ফিরে পেলেন তার বড় ভাই মাহফুজুর রহমান কালামকে বিজয়ী করেতে জামপুরে আলোচনা সভা সোনারগাঁয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন ৫ প্রার্থী সোনারগাঁয়ে ভবন ঘেঁষে মাটি খনন, ভেঙ্গে পড়লো পাশের স্থাপনা কালাম একমাত্র যোগ্য প্রার্থী, উপজেলা নির্বাচনে তাকে ভোট দিন: ডা. বিরু সোনারগাঁয়ে সার্বজনীন পেনশন মেলা ও স্পট রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্ধোধন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বউয়ের মামলা সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, ৪ জন বাতিল সোনারগাঁয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুবককে অপহরন করে নির্যাতনের অভিযোগ সানাউল্লাহকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা চেষ্টা ও ১৫ মামলার আসামী গ্রেপ্তার বন্দরে ইউএনও অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের আত্মহত্যা সোনারগাঁয়ে ২দিন ধরে মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ সোনারগাঁয়ে দুই ব্যাক্তি আটক, ৪৯ লাখ জাল টাকা উদ্ধার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আজিজুল ইসলাম মুকুল সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
সোনারগাঁয়ে সবুজে লিচুতে লাভের স্বপ্ন দেখছেন বাগান মালিকরা

সোনারগাঁয়ে সবুজে লিচুতে লাভের স্বপ্ন দেখছেন বাগান মালিকরা

Logo


নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডডটকম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৩টি ইউনিয়নের লিচু বাগান মালিকরা সবুজে লিচুতে লাভের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। গত দুই বছর করোনা ভাইরাস ও লিচু মৌসুমে রমযান মাস থাকায় লিচুর ফলন হলেও বাগান মালিকরা লিচু বিক্রি করে তেমন লাভবান হতে পারেননি। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় লিচুর ফলন ভালো হয়েছে সোনারগাঁয়ে। উপজেলা প্রতিটি লিচু বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজে রংঙ্গের লিচু। অন্যান্য বছর এপ্রিলের প্রথম দিকে সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে আসতে শুরু করে তবে এবার অনাবৃষ্টির কারণে এবার লিচু বাজারে আসতে একটু দেরী হতে পারে বলে ধারনা করছেন লিচু বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

সোনারগাঁ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও লিচু আবাদ হয় ৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায়। প্রতি বছর শীতের শেষের দিকে লিচুর ফুল ছাড়া শুরু করে। এর আগে বাগান মালিকরা লিচু গাছের গোড়ায় জৈব সার ও পানি দিয়ে গাছগুলোর যত্ম নেয়া শুরু করেন যাতে ফলন ভালো হয়। গাছগুলোর ভালো মতো যত্ন নিতে পারলে এবং আলো বাতাস ঠিক মতো গাছের পাতাতে লাগলে সে গাছে ভালো ফলন হয়। সে জন্য লিচু পারার সময় লিচুর সাথে ডালগুলোও অল্প করে ভেঙ্গে দেয়া হয় যাতে নতুন পাতা গজিয়ে শীত শেষে ডালগুলোতে নতুন পাতা গজিয়ে পাতার ডগায় ভাল ফুল আসে। শীতের শেষে গাছে ফুল আসার সাথে সাথে মৌমাছিরা ছুটে আসে সেই ফুল থেকে মধু আহরন করতে। লিচু মুকুল আসার পর মধূ ব্যবসায়ীরা বাগানে বাগানে গিয়ে মৌ চাষ শুরু করেন মধু আহরনের জন্য। লিচু বাগানে লিচু বিক্রি করে যেমন অর্থ উপার্জন করা যায় অপরদিকে ফুল থেকে মৌ চাষের মাধ্যমেও মধু সংগ্রহ করে অধিক অর্থ উপার্জন করা যায়। তবে এতে বাগান মালিকের তেমন লাভ না হলেও মৌ চাষিরা ব্যাপক লাভবান হোন। লিচু গাছে ফুল ছাড়ার ১৫ দিনের মধ্যে অথাৎ মার্চ মাসের প্রথম দিকে গুটি গুটি মুকুল ছাড়তে শুরু করে। মুকুলগুলো ছোট ছোট সবুজ রং ধারন করে বড় হতে থাকে এবং মাস খানেকের মধ্যে লিচু লাল রং ধরে পাকতে শুরু করে। লিচু সবুজ হওয়ার পর যদি সময় মতো বৃষ্টি হয় তাহলে খুব তারাতারি লিচু ভালো ফোড়ে ও পাকা ধরা শুরু করে। প্রতি বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের দিকে সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে আসতে শুরু করে এবং ১৫ দিনের মধ্যেই সব লিচু পেকে বাগান খালি হতে শুরু করে তখন লিচু গাছগুলো দেখে মনে হয় তাদের উপর দিয়ে কালবৈখাশী ঝড় ভয়ে গাছগুলোকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। স্থাণীয়রা জানান, লিচু ফল সুস্বাদু বিধায় এক সময় সোনারগাঁয়ে প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড় ও পতিত জমিতে শখের বসে লিচু গাছ লাগাতেন মানুষ। সেই লিচু পাকলে তারা নিজেরা ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠাতেন বাকিগুলো পশুপাখিরা খেতো। এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মৌসুমী ফল লিচু সুস্বাসু ও পুষ্টিকর ফল হওয়ার কারণে লিচুর চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এছাড়া সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের জেলার অন্য এলাকার তুলনায় আগে বাজারে আসায় ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখন বানিজ্যিক ভাবে সোনারগাঁয়ে লিচুর বাগানের চাষ করা হয়। সোনারগাঁয়ে তিন জাতের লিচু উৎপাদন হয়। (কদমি) চায়না থ্রি, কদমি ও পাতি লিচু। এক সময় ব্যাপক হারে পাতি লিচুর বাগান ছিল। পাতি লিচুর গাছগুলোও অনেক বড় হতো। আর গাছে চারদিকে ঝুলে থাকতো থোকায় থোকায় লাল রংঙ্গের পাকা লিচু। পাতি লিচুর তুলনায় চায়না থ্রি (কদমি) লিচুর সাইজ একটু বড় ও রসালো বিধায় এখন সোনারগাঁয়ে ব্যাপক হারে কদমি লিচুর বাগান করা হচ্ছে। কদমি লিচু গাছ পাতি লিচুর তুলনায় ছোট হওয়ার কারণে এক বিঘা জমিতে ৫০/৬০টি কদমি লিচু গাছ লাগানো যায়। পরিপক্ক একটি কদমি লিচু বাগান বছরে প্রায় বিঘা ৫ লাখ টাকার উপর অর্থ উপার্জন হয়। সে জন্য আগের চেয়ে দিনে দিনে সোনারগাঁয়ে লিচু বাগানের সংখ্যা ক্রমই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের লিচুর বাগানের মালিক আলমগীর জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সব বাগানেই লিচুর ফলন অনেক হয়েছে। গত বছর যে বাগান এক থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার আশা করা যায় সেই বাগান বিক্রি হবে ২ লাখ টাকার বেশী বিক্রি করতে পারবো। তিনি বলেন, ‘প্রচন্ড রোদের কারণে এবার লিচু বেশি ফোলেনি।’ তবে সোনারগাঁয়ের লিচু স্বাদে ভালো হওয়ায় প্রতি বছরই বাজারে এর কদর থাকে।

লিচু বাগানের ক্রেতা আব্দুল জলিল বলেন, এবার অন্যবারের তুলনায় লিচু ফলন ভালো হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টি ও রোদের কারণে লিচু ফোলেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারা নিতে আসছেন। এই লিচু আগে আসে বলে দাম কিছুটা বেশি।’

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আকতার জানান, এবছর লিচুর ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়-তুফান কম হলে লিচুর দাম ভালো পাবেন কৃষকরা। লিচুর আবাদ আরও বাড়ানোর জন্য কৃষি অফিস কাজ করছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩ জন উপসহকারী বাগান মালিকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। লিচুর মুকুল আসার পর পরই গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ বাগানে কীটপতঙ্গ, মাকড়সা দূর করার জন্য বালাইনাশক স্প্রে করা সহ গাছ ও মুকুলের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে গাছ মালিকদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী, জনবল নিয়ে লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাঠে কাজ করছেন।
তিনি আরও জানান, সোনারগাঁয়ে প্রায় একশ’ একর জমিতে প্রায় দুই শতাধিক বাগানে লিচুর আবাদ হয়েছে। বাণিজ্যিক ভাবে সোনারগাঁয়ে লিচু চাষ বাড়াতে লিচু চাষিদের নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution